ধর্ম পরিবর্তনের পর ‘আয়শা’ নাম নিলেন জবি সহকারী অধ্যাপক
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিতু কুন্ডু। দীর্ঘ ২৯ বছর কোরআন-হাদিস পড়াশোনা করার পর গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণের
কথা জানান তিনি। এবার নামও পরিবর্তন করেছেন। মঙ্গলবার নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে নিজের নাম পরিবর্তন করেন রিতু কুন্ডু। ঢাকা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের প্রথম শ্রেণির ম্যা’জিস্ট্রে’ট দেবদাশ চন্দ্র অধিকারীর দেওয়া হলফনামার মাধ্যমে স্বেচ্ছায় তিনি
নতুন নাম রাখেন ‘আয়শা জাহান’। আয়শা জাহান (বর্তমান নাম) নীলফামারী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের
লোকপ্র’শাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ২০১৩ সালে তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লো’ক প্র’শাসন বিভাগের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০১৭ সাল থেকে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্র’শাসন বিভাগে
শিক্ষকতা করছেন। নতুন নাম রাখার পর তিনি বলেন, আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি, আল্লাহ আমাকে ইসলামের মতো মহান সত্য ধর্মের সন্ধান দিয়েছেন। আজ আমার যে নতুন পরিচয়; আয়শা জাহান নামের মাধ্যমে হয়েছে, সে জন্যও আমি
আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি। এর আগে, গতবছরের ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, আমি ২০১৭ সালের ১৬ মার্চ ইসলাম গ্রহণ করেছি। কবে থেকে কীভাবে এ পথে যাত্রা শুরু হল, তা বলতে হলে বলতে হবে এ যাত্রা আসলে খুব অল্প দিনের বা অল্প
সময়ের নয়, খুব ছোট থেকেই আল্লাহ আমাকে ইসলাম কবুলের জন্য তৈরি করেছিলেন। ছোটবেলা থেকে আজ পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি ঘ’টনা, শিক্ষা, প্রতিবন্ধকতা আর সমাজের অ’সং’গতি আমাকে ধীরে ধীরে ইসলামের পথে পরিচালিত করেছে। তাই ইসলাম
ধর্ম গ্রহণ করেছি। তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব (কম্পারেটিভ রিলিজিয়ন) নিয়ে জ্ঞা’ন অ’র্জন করেছি। শান্তির এ ধর্মে আমি দিক্ষিত হয়েছি প্রায় চার বছর আগেই। ভিডিও বার্তায় শিক্ষিকা আরও বলেন , দীর্ঘ ২৯ বছরের বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা ও জ্ঞা’নবু’দ্ধির
আলোকে আমি ইসলামের বিষয়ে এক মাসব্যাপী পড়াশোনা শুরু করি। ১৬ দিনের মধ্যেই আমি সত্য উপলব্ধি করি এবং ২০১৭ সালের মার্চে ইসলাম গ্রহণ করি। এই দীর্ঘ ২৯ বছর পর্যন্ত আমি নিজের পরিবার, সমাজ ও মানুষের আচার-ব্যবহার পর্যবেক্ষণ
করি। এ দীর্ঘ সময় অন্যান্য প্রধান সব ধর্মের গ্রন্থাবলি পাঠ করেছি। জাপানেও এ বিষয়ে পড়াশোনা করি। ২০১২ সালে এসে বুঝতে পারি, এগুলো মানুষ রচিত বই (ঐশী বাণী নয়)। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ২৯ বছর পর আমি পবিত্র কোরআনের বাংলা অনুবাদ
নিয়ে পড়ালেখা করি। এর পাশাপাশি আমি হাদিসও পাঠ করি। সামনে কোরআনের যে সূরা আর হাদিস পেয়েছি, তাই মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। মহান আল্লাহর নির্দেশনার কারণ ও বি’ধিনি’ষেধ নিয়ে চিন্তাভাবনা করি। কখনও এ বিষয়ে স্বপ্নও দেখেছি। তা হয়ত
অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হবে। খুব ছোট থেকেই হয়ত আল্লাহ আমাকে ইসলাম কবুলের জন্য তৈরি করেছিলেন। ছোট থেকে আজ পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি ঘটনা, শিক্ষা, প্র’তিব’ন্ধকতা আর সমাজের অ’সং’গতি আমাকে ধীরে ধীরে ইসলামের পথে
পরিচালিত করেছে। আমি যখন বুঝতে পারলাম, আমাকে নামাজ পড়তে হবে, সেদিন থেকে টানা ১৪ মাস আমার নামাজ কা’যা হয়নি। এরপর চাকরির কারণে দু-একবার কা’যা হয়ে যায়। আমি যখন অনুভব করলাম, আমাকে পর্দা করতে হবে, সেদিন থেকে
আমি হিজাব পরা শুরু করি।