বিড়ালের মুখ দেওয়া পানি দিয়ে অজু করা যাবে কি?
অনেকেই শখের বশে বিড়াল পু;ষে থাকেন। একটি, দুইটি কিংবা আরও বেশি। বিড়াল এমন বন্ধুসুলভ গৃ;হপা;লিত প্রাণী যে
সামান্য আদর-যত্ন করলে ও খাবার-দাবার দিলে— সহজেই পোষ মেনে যায়। প্রখ্যাত সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.)-এর বিড়ালপ্রীতির
কথাও প্রসিদ্ধ। গৃহপালিত আদুরে প্রাণী হওয়ার কারণে বিড়াল আমাদের চারপাশে ঘুরাঘুরি করে। আমরা যেসব পাত্রে খাবার খাই
অনেক সময় এগুলোতে মুখ দেয় বিড়াল। এতে করে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে বিড়াল কোনো খাবারে মুখ দিলে তা পবিত্র কিনা
এবং বিড়াল কোনো পানির পাত্রে মুখ দিলে সেই পানি অজুর কাজে ব্যবহার করা যাবে কিনা? এর উত্তর হলো- বিড়ালের মুখ
দেওয়া খাবার খেতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে যদি কারও রুচিতে ভালো না লাগে, তাহলে খাবে না। বিড়ালকে কিংবা অন্য
কোনো প্রাণীকে দিয়ে দেবে। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘বিড়াল নাপাক নয়। এটা তোমাদের আশেপাশে ঘনঘন বিচরণকারী
বা বিচরণকারীণী। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫৭; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৬৭; মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ২৩১৯১; মিশকাত, হাদিস : ৪৮)ইকরিমা রহ. থেকে বর্ণিত আছে- أَنّهُ رَأَى أَبَا قَتَادَةَ الْأَنْصَارِيّ يُصْغِي الْإِنَاءَ لِلْهِرِّ فَتَشْرَبُ مِنْهُ، ثُمّ يَتَوَضّأُ بِفَضْلِهَا তিনি আবু কাতাদা আনসারী
রা.-কে দেখেছেন, বিড়ালকে পানি পান করার জন্য পানির পাত্র কাত করে দিয়েছেন। বিড়ালটি পানি পান করার পর অবশিষ্ট পানি দ্বারা তিনি অজু করেছেন। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ৩৪৬) তাবেয়ি দাউদ ইবনুস সালিহ (রহ.) তার মা থেকে
বর্ণনা করেন যে, তার মায়ের মুক্তিদানকারিণী মনিব একবার তাকে কিছু ‘হারিসা’ নিয়ে আয়েশা (রা.)-এর নিকট পাঠান। তখন তিনি তাকে নামাজরত অবস্থায় পান। আর তিনি আমাকে ইশারা করে খাবারটি রেখে যেতে বললেন। এসময় একটি বিড়াল আসল
এবং তা থেকে কিছু খেয়ে ফেলল। নামাজ শেষে আয়েশা (রা.) বিড়ালের খাওয়া স্থান হতেই কিছু খাবার খেলেন এবং বললেন, আল্লাহ রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘বিড়াল নাপাক নয়। তা তোমাদের পাশে অধিক বিচরণকারী একটি জন্তু। আর আমি রাসুল (সা.)-
কে তার উচ্ছিষ্ট পানি দিয়ে অজু করতে দেখেছি। (আবু দাউদ, হাদিস : ৭৬; মিশকাত, হাদিস : ৪৮৩) নাফে রহ. বর্ণনা করেন- عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنّهُ كَانَ يَكْرَهُ سُؤْر السِّنّوْرِ أَنْ يُتَوَضّأَ بِهِ আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বিড়ালের উচ্ছিষ্ট পানি দ্বারা অজু করা অপছন্দ করতেন। (সূত্র :
আলআওসাত, ইবনুল মুনযির ১/৪১১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ৩৪০, জামে তিরমিযী, হাদীস ৯২; কিতাবুল আছল ১/২২; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ১/২৮২; আলমাবসূত, সারাখসী ১/৫১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৪;
আদ্দুররুল মুখতার ১/২২৩)