যে সব কাজ করলে সহজ হবে জান্নাতে যাওয়া
একজন মুসলমান ইবাদত করে ঈমানের সঙ্গে মৃ’ত্যুবরণ করবেন-এটাই স্বাভাবিক। আর ঈমানদারের জন্য পুরস্কার হিসেবে রয়েছে জান্নাত। তবে জান্নাতে যেতে হলে রয়েছে কিছু শর্ত। যেকোনো আমল ইখলাসের সঙ্গে পালন না করে কখনোই জান্নাতবাসী হওয়া সম্ভব নয়। এটাই জান্নাত লাভের অপরিহার্য শর্ত।বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের
শরীর ও অবয়বের দিকে তাকান না; বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমলের দিকে তাকান। মুসলিম শরীফের ২৫৬৪ নম্বর হাদিসে এটি উল্লেখ করা আছে। আরেক হাদিসে নবীজি বলেছেন, ‘তোমার ঈমানকে খাঁটি করো, অল্প আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট।’ আমল সব সময় জান্নাতে যাওয়ার মা’নদ’ণ্ড নয়। অন্যের অধিকার হরণ করে অনেক ইবাদত করেও জান্নাতে যাওয়া যাবে
না। রাসুল (সা.) একবার সাহাবিদের বলেন, তোমরা কি জানো, প্রকৃত নিঃস্ব বা হ’তদ’রিদ্র কে? তারা উত্তর দিলেন, আমাদের মধ্যে নিঃস্ব ওই ব্যক্তি, যার কাছে কোনো অর্থকড়ি এবং কোনো আসবাব নেই। তখন নবীজি বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে প্রকৃত নিঃস্ব ওই ব্যক্তি, যে কি’য়ামতের দিন সালাত, সাওম ও জাকাত নিয়ে হাজির হবে। কিন্তু সে এমন অবস্থায় আসবে যে সে হয়তো
কাউকে গা’লি দিয়েছে, কারো প্রতি মি’থ্যা অ’প’বাদ আরোপ করেছে, কারও সম্পদ অ’বৈধভাবে ভ’ক্ষণ করেছে, কারও র’ক্তপা’ত করেছে অথবা কাউকে মে’রেছে। অতঃপর তাকে অ’ত্যাচারিত হিসেবে নেকি দেয়া হবে। পরিশেষে যদি তার নেকি অন্যদের দাবি পূরণ করার আগেই শেষ হয়ে যায়, তাহলে তাকে জা’হান্না’মে নিক্ষেপ করা হবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫৮১০) তবে বিশেষ কিছু
কাজ গুরুত্বের সঙ্গে করলে জান্নাতর পথ সহজ হয়ে যায়। যেমন মুখ ও গো’পনা””ঙ্গের হেফাজত করা। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি উভয় ঠোঁ’টের মধ্যভাগ ও দুই রানের মধ্যভাগ অর্থাৎ ল”জ্জাস্থা’ন হেফাজতের দায়িত্ব গ্রহণ করে আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব গ্রহণ করি।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭৪)ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ হজ। কবুল করা হজের প্রতিদান একমাত্র জান্নাত। নবীজি
বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ করে, কোনো অ’শ্লীল কথা বলে না এবং পা’পকা’জে লি’প্ত হয় না, সে মায়ের পেট থেকে জ”ন্ম নেয়ার দিনের মতো নি’ষ্পাপ হয়ে ফিরে আসে। আর কবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়।’ (বুখারি, হাদিস: ১৫২১) যারা আল্লাহকে ভ’য় করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের জন্যও জান্নাত অবধারিত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআন
মাজিদে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই খোদাভীরুরা থাকবে ছায়ায় ও প্র’স্রবণসমূহে এবং তাদের বা’ঞ্ছিত ফলমূলের মধ্যে। বলা হবে, তোমরা যা করতে তার বিনিময় তৃপ্তির সঙ্গে পানাহার করো। এভাবেই আমি স’ত্কর্মশীলদের পুরস্কৃত করে থাকি। ’ (সুরা : মুরসালাত, আয়াত : ৪১-৪৪) কু-প্র”বৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করলে জান্নাতে যাওয়া যাবে। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘পক্ষান্তরে যে তার রবের সামনে
(কি’য়াম’তের দিন) উপস্থিত হওয়ার ভ’য় রাখে এবং কু-প্র’বৃত্তি থেকে নিজেকে বি’রত রাখে, জান্নাতই হবে তার আবাস।’ (সুরা নাজিআত, আয়াত : ৪০-৪১) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা ছোট আমলও কখনো জান্নাতে যাওয়ার কারণ হতে পারে। যেমন হাদিসে আছে, কুকুরকে পানি খাওয়ানোর বিনিময়েও মহান আল্লাহ এক ব্য’ভিচা’রী নারীকে জান্নাত দান করবেন। আসলে কারও
কারও জন্য জান্নাতে যাওয়া খুব সহজ হবে। আবার কারও কারও জন্য তা হবে অনেক ক’ঠিন। তাই ছোট ও বড় সবধরনের আমলকেই একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা, জান্নাতে যাওয়ার প্রথম ও প্রধান শর্তই হলো মহান
আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন।