রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের শেষ বলে আয়ারল্যান্ডের হার

ডাবলিনে শুক্রবার তুমুল উত্তেজনা ছড়ানো তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে নিউ জিল্যান্ডের জয় ১ রানে। ৩৬০ রানের পুঁজি নিয়ে প্রতিপক্ষকে তারা আটকে দেয় ৩৫৯ রানে। শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের শেষ ওভারে দরকার ছিল ১০ রান। প্রথম বলে কোনো রান নিতে পারেননি অভিষিক্ত গ্রাহাম হিউম। দ্বিতীয় বলে আসে একটি সিঙ্গেল। ব্লেয়ার টিকনারের তৃতীয় বলে উইল ইয়াংয়ের ক্যাচ ঝাঁপিয়ে মুঠোয় জমাতে পারেননি গ্লেন ফিলিপস। উল্টো হয় বাউন্ডারি। পরের বলে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন ইয়াং। শেষ দুই বলে ৪ রানের লক্ষ্যে আর পৌঁছাতে পারেনি আইরিশরা। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল আয়ারল্যান্ড, ২০২০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। স্টার্লিংয়ের ১০৩ বলে ১২০ রান ও টেক্টরের ১০৬ বলে ১০৮ রানের ইনিংসে সেই রেকর্ড ভাঙার আশা জাগায় তারা। শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হলো না। আরেকটি কীর্তিও গড়ার পথে ছিল অ্যান্ডি বালবার্নির দল। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড গড়তে পারত তারা। ২০১৫ সালে তাদের ৩৫০ রানের লক্ষ্যে জিতেছিল ইংল্যান্ড। ম্যাচের প্রথম ভাগটি ছিল গাপটিলকে ঘিরে। বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান করেন ১১৫ রান। ১২৬ বলের ইনিংসটি সাজান ২ ছক্কা ও ১৫ চারে। হেনরি নিকোলসের ব্যাট থেকে আসে ৭৯ রান। ম্যালাহাইডে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে গাপটিল ও ফিন অ্যালেনের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় নিউ জিল্যান্ড। তাদের উদ্বোধনী জুটিতে ৭৮ রান চলে আসে দ্রুত। দশম ওভারে অ্যালেন ফিরলে ভাঙে জুটি। উইল ইয়াং রান আউটে কাটা পড়ে ফেরেন তাড়াতাড়ি। এরপর টম ল্যাথামকে নিয়ে এগিয়ে যান গাপটিল। কার্টিস ক্যাম্পারের বলে অধিনায়ক ল্যাথামের বিদায়ে ভাঙে ৬৫ বল স্থায়ী ৬০ রানের জুটি। ৪৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন গাপটিল। কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে পা রাখেন তিনি ১১৬ বলে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে যা তার ১৮তম। লেগ স্পিনার গ্যারেথ ডেলানির বলে স্লগ সুইপ করে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন গাপটিল। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৩৮ বলে ফিফটি করা নিকোলসকে বোল্ড করে দেন উইল ইয়াং। ৩ ছক্কা ও ৭ চারে তিনি করেন ৫৪ বলে ৭৯ রান। ব্যাট হাতে আক্রমণ চালান ফিলিপসও। ২ ছক্কা ও ৫ চারে ৩০ বলে করেন ৪৭। শেষ দিকে মাইকেল ব্রেসওয়েল ও মিচেল স্যান্টনারের ব্যাটে সংগ্রহ সাড়ে তিনশ রান পার হয় নিউ জিল্যান্ডের। বিশাল লক্ষ্য রান তাড়ায় শুরুতেই ধাক্কা খায় আয়ারল্যান্ড। শূন্য রানে ফিরে যান বালবার্নি। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনও টেকেননি বেশিক্ষণ। দলকে সঠিক পথে রাখেন স্টার্লিং ও টেক্টর। প্রায় একই গতিতে রান বাড়াতে থাকেন দুইজন। স্টার্লিং ফিফটি স্পর্শ করেন ৫৬ বলে, টেক্টরের পঞ্চাশ আসে ৫৪ বলে। তাদের দুজনের জুটি শতরানে যায় ৯৫ বলে। দারুণ সব শট খেলে দলকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিতে থাকেন তারা। ৯২ রান থেকে ব্রেসওয়েলকে তিন বলে দুই চার মেরে ক্যারিয়ারের ত্রয়োদশ সেঞ্চুরিরে পা রাখেন স্টার্লিং, ৯১ বলে। ম্যাট হেনরিকে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় শেষ হয় তার ৫ ছক্কা ও ১৪ চারের ইনিংস। ভাঙে ১৭৯ রানের জুটি। তৃতীয় উইকেটে ওয়ানডেতে যা আয়ারল্যান্ডের রেকর্ড। দ্রুত কিছু রান তুলে ডেলানি বিদায় নেন। ক্যাম্পারও পারেননি টিকতে। তবে এক প্রান্তে দলের আশা বাঁচিয়ে রাখেন টেক্টর। প্রথম ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটসম্যান এবার শতরানে পা রাখেন ৯৬ বলে। মিচেল স্যান্টনারের স্পিনে বোল্ড হয়ে ফেরেন টেক্টর ৫ ছক্কা ও ৭ চারের ইনিংস খেলে। তার বিদায়ের পরও আইরিশদের আশার প্রদীপ জ্বলছিল। কিন্তু ৪ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ৩৯ বলে ৫১ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেননি তারা। খুব কাছে গিয়েও হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা। আগামী সোমবার শুরু দুই দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।

admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *