৯ বছর পিছিয়ে গেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
ক্রিকেটের টি -২০ পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যে ভয় পাচ্ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট ভক্তরা শেষ পর্যন্ত সেই ভয় সত্য হলো। প্রথমবারের মতো জিমবাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরে গেল টিম টাইগাররা বাংলাদেশের বিপক্ষে
সর্বশেষ ২০১৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজে জয়লাভ করেছিল জিম্বাবুয়ে। তবে এবার সিনিয়র ক্রিকেটারদের বিশ্রামে দিয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য জিম্বাবুয়ে তে নতুন একটি দল পাঠায় বাংলাদেশ। যেখানে প্রথম ম্যাচ হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে সিরিজ সমতা করে বাংলাদেশ। তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও দুর্দান্ত শুরু করে
বাংলাদেশের বোলাররা। যেখানে একটি দুইটি ওভার খারাপের পরেও জিম্বাবুয়েকে ১৫৬ রানের মধ্যে আটকে রাখে বাংলাদেশ। কিন্তু এই রানও বাংলাদেশের কাছে রানের পাহাড়। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছে তারা শাহিন-শা আফ্রীদি, মিসেল স্টার্ক, রাশিদ খানের মতো বোলারদের বল মোকাবেলা করছে। প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যাটিং করতে পারেননি কোন
ব্যাটসম্যান। যার সুবাদে শেষ পর্যন্ত শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জিম্বাবুয়ের কাছে ১০ রানে হেরে সিরিজ হারল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের এটাই প্রথম সিরিজ জয়। ম্যাচের শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৬ রান তুলে জিম্বাবুয়ে। জবাবে ১৪৬ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। জিম্বাবুয়ের দেয়া ১৫৭ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে
শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ব্যক্তিগত ১৩ রানে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার লিটন কুমার দাস। অভিষিক্ত ব্যাটার পারভেজ হোসেন ইমনের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ২ রান। আর দ্বিতীয় উইকেটের ব্যাট করতে নামা এনামুল হক বিজয় করেছেন ১৪ রান। চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশ দলের হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ
হোসেন। পঞ্চম উইকেটে দুজন মিলে গড়েন ৩৯ রানের জুটি। এ সময় জয়ের স্বপ্ন দেখছিলো টাইগাররা। শিবির। কিন্তু ব্রেড ইভান্সের পরপর দুই বলে মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেক ফিরলে ফের চাপে পড়ে দল। আবারও বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখায় আফিফ-মেহেদি জুটি। কিন্তু ১৯তম ওভারে শেখ মেহেদি হাসান ২২ রানে আউট হলে সেই স্বপ্নও ধূলিস্বা’ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়া আফিফ ২৭ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। এদিকে ৩ রান করেন হাসান মাহমুদ, আর ২ রানে
অপরাজিত থাকেন নাসুম আহমেদ। এর আগে ম্যাচের শুরুতে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেইগ এরভিন। শুরুটা ভালোই ছিল স্বাগতিকদের। প্রথম তিন ওভারে বিনা উইকেটে আসে ২৯ রান। চতুর্থ ওভারে প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। বল করতে এসে প্রথম বলেই ওপেনার রেগিস চাকাভাকে ১৭ রানে ফেরান নাসুম আহমেদ। এরপর পঞ্চম
ওভারে জোড়া আঘাত আনেন শেখ মেহেদি হাসান। তার বলে বোল্ড হওয়ার আগে ওয়েসলি ম্যাধভের করেন ৫ রান। পরের বলেই শূন্যরানে আউট হয়েছেন দলের অভিজ্ঞ ব্যাটার সিকান্দার রাজা। এদিকে শেন উইলিয়ামসকে নিজের প্রথম শিকার বানান বাংলাদেশি অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন। উইলিয়াস করেন ২ রান। আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বলে আউট হওয়ার আগে
ওপেনার ক্রেইগ এরভিন করেন ২৭ রান। ১৩ ওভারে মাত্র ৬৭ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারালে মনে হচ্ছিলো একশ রানও করতে পারবেনা জিম্বাবুয়ে। ম্যাচের এমতাবস্থায় হুট করেই জ্বলে উঠেন রায়ার্ন বার্ল। নাসুম আহমেদের এক ওভারেই ৩৪ রান তুলার পর সচল হয় স্বাগতিকদের রানের খাতা। এ সময় লুক জংইউকে সঙ্গে নিয়ে মাত্র ৩১ বলে গড়েন ৭৯ রানের জুটি। তাতেই লড়াকু
সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা। ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করার পর মাত্র ২৮ বলে ৫৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন রায়ার্ন বার্ল। এদিকে তাকে সঙ্গ দেয়া লুক জংইউর ব্যাট থেকে এসেছে ৩৫ রান। আর ৫ রানে ব্রেড ইভান্স ও ১ রানে ভিক্টর নিউচি অপরাজিত
থাকেন। জিম্বাবুয়ের ইনিংস থামে ১৫৬ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নেন শেখ মেহেদি হাসান ও হাসান মাহমুদ। এছাড়া একটি করে উইকেটের দেখা পেয়েছেন চারজন বোলার।